প্রথম প্রেমে সফল হলে অধরা থাকে জীবনের বাকে বাকে থাকা নানা অ্যাডভেঞ্চার, জীবনের অনেক কিছুই থেমে যায় শুরুতেই। পরিচালকের এ বক্তব্য যেন নির্মম সত্য। সালমান দুলকার তার প্রথম প্রেমে সফল হলে হয়তো তার বাকি জীবনটা সাদামাটাভাবে আমেরিকায় কাটিয়ে দিতে হতো, তার আর আদর্শ কমিউনিস্ট হয়ে ওঠা হতো না।
২০১৫ সালের এক সত্য ঘটনা অবলম্বনে এ মুভি (Comrade in America – CIA)। আম্রিকার বাঘা সেন্ট্রাল ইন্টিজেন্স অ্যাজেন্সি (CIA) কে পরিচালক স্যাটায়ার করার ছলে যেভাবে কমরেড ইন আম্রিকা লিখেছেন তেমনি ছবিতে কমিউনিজম, রিফিউজি, আমেরিকা-মেক্সিকো বর্ডারের ভয়াবহতা, হন্ডুরাস নিকারাগুয়া হয়ে আমেরিকা যাওয়ার চোরাইপথের নির্মমতা, এমন কঠিন বিষয়গুলে তিনি বর্ণনা করেছেন প্রেমকে উপজীব্য করে তাই বোরিং হওয়ার উপায় নেই। ছবির মূল উপজীব্য প্রেম, আম্রিকা থেকে কেরালায় পড়তে আসা এক তরুণীর সঙ্গে স্থানীয় তরুণ কমিউনিস্ট সালমান দুলকারেরর প্রেম কাহিনী।
আমগো মতো যারা বুকে চে গুয়েভারার টি শার্ট আর মাথায় লাল সালাম ক্যাপ পড়ে ঘুরে বেড়ায় তাদের কাছে ছবিটা এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো। একটা দৃশ্যে: দুলকারের কাছে তার প্রেমিকা জানতে চায়, তুমি যে এতো এতো কমিউনিজম, সাম্যবাদ বক্তৃতা করে বেড়াও অথচ কমিউনিজম কী সেটাই আমি বুঝি না? সালমানের উত্তর ছিল- তুমি কলেজে রোজ টিফিন নিয়ে এসে একাই খাও, যে টিফিন নিয়ে আসতে পারে না যদি তার সাথে শেয়ার করে খাও এটাই কমিউনিজম। এতো সহজভাবে কমিউনিজম ব্যাখ্যা করা যায় আগে জানা ছিল না। কেরালার পার্টি অফিসের বিপ্লব জিন্দাবাদ, হন্ডুরাসে নিকারাগুয়ায় গোলাগুলি, আম্রিকায় ট্রাম্প যেন জিততে না পারে নিউইয়র্কের ড্রাইভার বড় ভাইকে দিয়ে সে কাজ করানোর মতো হাস্যরস, এসব ঘটনার কেন্দ্রিবন্দু সালমান দুলকারের প্রথম প্রেম।
পরিচালকের গল্প বলার ধরনে মুগ্ধ। যেন এক প্রেম-কমিউনিজমের প্যাকেজ। IMDB রেটিং ৬.৬, আমার রেটিং ৯/১০।